ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য বাংলার অগ্নিকন্যা শিরীন আখতারের রাজনৈতিক প্রোফাইল

114 Views

ফেনী প্রতিনিধি, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম: ফেনী ১আসনের সংসদ সদস্য বাংলার অগ্নিকন্যা শিরীন আখতারের রাজনৈতিক ইতিহাস : * ১৯৬৭ সালে আজিমপুর গার্লস স্কুলের ৯ম শ্রেণির ছাএী থাকাকালে ছাএলীগে যোগদান ;

* ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান ও পরবর্তী আন্দোলন অংশগ্রহণ

* ১৯৭০ সালে ছাএলীগ সভাপতি বদরুন্নেসা কলেজ

* ১৯৭১ সালে মাসের অগ্নিঝড়া দিনগুলিতে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে ঢাকা শহর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহন এবং ছাএীদের প্রশিক্ষণ গ্রহণে সংগঠিত করেছি। যুদ্ধে ৯মাস দেশের অভ্যন্তরে থেকেই ঢাকার বুকে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন কার্যক্রম সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

* ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগের আজিমপুর আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

* ১৯৭৩ ডাকসু নির্বাচনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শামসুন্নাহার হল ছাত্রী সংসদে সমাজ সেবা সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন।

*১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে খন্দকার মোশতাক সরকারের ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে বিপ্লবী সংগ্রাম অব্যাহত রাখাতে গিয়ে ৩০ আগস্ট গ্রেপ্তার এবং অমানুষিক নিযার্তনের শিকার হন।

*১৯৭৫ সালে গ্রেপ্তার হয়ে সামরিক আদালতে ২ বছর সশ্রম কারাভোগ শিকার হন।

*১৯৭৯ সালে ডাকসু নির্বাচনে ডাকসুর নেত্রী মিলানায়তনে সম্পাদিকা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য পদে নির্বাচিত। একই সালে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য এবং ১৯৮১ সালে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হন।

* ১৯৮২ সালে সামরিক শাসন বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সুচনায় সাহসী ভুমিকা পালন করেন।

* ১৯৮৩ সালে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি নির্বাচিত এবং ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত সফালতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।

* ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৮৭ সালে পর্যন্ত ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে আন্দোলন পরিচালনা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্ব দান এবং দীর্ঘসময় আত্মগোপন করেন নিজেকে।

* ১৯৯০ এর গনঅভ্যুত্থানের শ্রমিক জোট, স্কপ, ঐক্যবদ্ধ নারী সমাজের কেন্দ্রীয় নেত্রী হিসাবে ভুমিকা পালন করেন।

* ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে ফেনী ১ আসনে জাসদের পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

* ১৯৯১ সালে নারির ক্ষমতায়ন , নারী/পরুষের সমকাজে সমমজুরী ও সমমর্যাদা এবং ‘সকল নারীর কর্মজীবী নারী – ডাক দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন কর্মজীবী নারী সংগঠন।

* ১৯৯৮ সালে জাতীয় সামাজতান্ত্রি দল- জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির যগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং স্থায়ী কবিটি সদস্য নির্বাচিত হন।

* ১৯৯৯ সালে জাতীয় বাংলাদেশ শ্রমিক জোটের সভাপতি নির্বাচিত হন।

* ১৯৯৯ সালে অনন্যা শীর্ষদশ পুরস্কার ভূষিত হন।

* ২০০৬ সালে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরীর দাবিতে সফল আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।

* ২০০০ সালে ২৬ মে বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি হয়েছেন।

* ২০১০ সালে নারী উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের আন্দোলনের নেতৃত্বের ভুমিকা রাখি।

* ২০১৬ সালে জাতীয় সামাজতান্ত্রিক দল – জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

*ফেনী -১ আসনে, ৫ই জানুয়ারি ২০১৪ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ একাদশ সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ‘গার্ড অব অনারে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধার জয়নাল হাজারী

65 Views

ফেনী প্রতিনিধি, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম: বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, সাবেক সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, জয়নাল আবেদীন হাজারীর জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বিকাল পৌনে ৫টার দিকে ফেনী পাইলট হাইস্কুল মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ফেনী জহিরিয়া মসজিদের খতিব মুফতি ইলিয়াস হোসেন তার জানাজা পড়ান। এর আগে ফেনী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ‘গার্ড অব অনার’ দেয়া হয়। জানাজা পূর্ব বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের হুইপ, সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবদীন ভিপি, সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান, জয়নাল হাজারীর ভাগিনা সাফায়েত হোসেন লিটু প্রমুখ। এ ছাড়াও জানাজায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন, জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত আলীসহ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আপামর জনগণ উপস্থিত ছিলেন। জানাজা শেষে শহরের মাস্টারপাড়া মুজিব উদ্যানের কবরস্থানে জয়নাল হাজারীকে দাফন করা হয়। গত রোববার বিকাল সোয়া ৫টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জয়নাল হাজারী মৃত্যুবরণ করেন।জয়নাল হাজারী ছিলেন চিরকুমার। ফেনীর মাস্টারপাড়ায় শৈল কুটির নামে তার একটি বাড়ি রয়েছে। ১৯৮৪-২০০৪ সালের ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা পদ পান।

কেন্দ্রীয় আ’লীগ নেতা জয়নাল হাজারির সঙ্গে সিঙ্গাপুরে যাওয়া হলো না জেবার

93 Views

মাহমুদ খাঁন ,দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম: জয়নাল হাজারির একটি পত্রিকা আছে। পত্রিকার পাশাপাশি তিনি ফেসবুকে একটি লাইভ অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন। যেখানে সমসাময়িক বিষয়াবলী নিয়ে বিশ্লেষণ করতেন। মাঝে মধ্যে সেসব আলোচনা সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচ্য বিষয় হতো। কখনো কখনো পরিণত হতো সমালোচনায়। এছাড়াও ওই লাইভে সংবাদ বুলেটিন প্রচার করতেন।ওই সংবাদ বুলেটিন তিনি জেবা নামের একজন মেয়েকে নিযুক্ত করেছিলেন। অবাধ বুলেটিন প্রচারের জন্য জয়নাল হাজারী যেখানে যাবেন সেখান থেকেই প্রচার করবেন জানিয়েছিলেন। চিকিৎসার জন্য জয়নাল হাজারী সিঙ্গাপুরে যেতেন। সেখান থেকে বুলেটিন প্রচার অব্যাহত রাখতে চেয়েছিলেন। সম্প্রতি জয়নাল হাজারী ফেসবুক লাইভে জেবা নামের ওই তরুণীকে উপস্থিত করান। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের এখানে যে মেয়েরা এসেছে তাদের মধ্যে তুমি স্মার্ট। তুমি যদি সবকিছু ঠিকঠাক ম্যাচ করতে পারো তাহলে আমরা অনুষ্ঠান তোমাকে নিয়েই করবো। আমাদের এখানে এখন পর্যন্ত যত মেয়ে এসেছে তুমি তাদের মধ্যে স্মার্ট এবং দেখতেও সুন্দর।’এসময় জেবা নিঃশব্দে ঠোঁট প্রসারিত করে হেসে ওঠেন। কথোপকথন স্টাইলে ওই লাইভে জেবাকে জয়নাল হাজারী বলেন, ‘আমাদের প্রথম প্রশ্ন তুমি কি গান গাইতে পারো? জেবা বলেন, চেষ্টা করবো, মোটামুটি। জয়নাল হাজারী বলেন, চেষ্টা করা এক জিনিস আর পারো কি না, গাও কি না? জেবা ফের বলেন, মোটামুটি।’এ সময় জয়নাল হাজারী বলেন, ‘গান গাওয়ার ক্ষেত্রে মোটামুটি শব্দটা আমার কাছে রহস্যজনক। অবশ্য কেউ নিজেকে নিয়ে বলতে পারে না যে আমি ভালো গান গাই বা খারাপ গাই। যদি তুমি মোটামুটি বলো, তাহলে তুমি নিজের কথা নিজে বলছ না। মোটামুটি মানে তুমি পারো, আমার মনে হয় তুমি ভালোই গাও। আজকে তোমাকে আমি গাইতে বলবো না। তুমি যদি রেগুলার আসা যাওয়া করো তাহলে আমাদের শ্রোতাদের গান শোনানো হতে পারে।’নাচের কথা জিজ্ঞেস করতেই জেবা বলেন, ‘অ্যাজ এ মডেল নাচ তো আমাকে পারতেই হবে। যেহেতু আমি মিডিয়াতে কাজ করি। নাচ পারি। জয়নাল হাজারী জেবাকে পরের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেন, তোমার দেশের বাড়ি কোথায়? জেবা বলেন, বগুড়াতে। জয়নাল হাজারী ফের জিজ্ঞেস করেন বগুড়া কোন উপজেলা? জেবা বলেন, শিবগঞ্জ।’জয়নাল হাজারী জানালেন, তার এই লাইভ প্রোগ্রাম বিভিন্ন জায়গা থেকে করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা সিঙ্গাপুর থেকেও এই লাইভ প্রোগ্রাম করবো। এমনকি মালয়েশিয়াতেও করতে হবে। মালয়েশিয়া আমাদের কাছে ডালভাত। আমরা যদি সিঙ্গাপুরে করি, তুমি আমাদের সঙ্গে যাবে কি না? হ্য্যাঁ ইনশাল্লাহ। যদি ভালো নিউজ প্রেজেন্টার হতে পারি কেন যাব না? জয়নাল হাজারী বলেন, তোমার গার্ডিয়ান রাজি হবে? জেবা বলেন,আমার মা-বাবা সব সময় আমাকে সাপোর্ট করে। সিঙ্গাপুর কেন আমকার মা বাবা বলে ভালো কাজের জন্য দেশের ওই প্রান্তে চলে যাও। জয়নাল হাজারী বলেন, আমরা খুবই খুশি হলাম যে তুমি আমাদের সঙ্গে সিঙ্গাপুর যেতে রাজি আছ।’ কিন্তু সিঙ্গাপুর থেকে জয়নাল হাজারীর এই লাইভ বুলেটিন করার সুযোগ হয়নি। জেবারও সিঙ্গাপুর যাওয়ার সুযোগ হলো না। তার আগেই প্রয়াত হলেন জয়নাল হাজারী।

৮ নং সোনাপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন চৌধুরী

93 Views

৮ নং সোনাপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন চৌধুরী

মাহমুদ খাঁন নির্বাহী সম্পাদকঃ

সোনাইমুড়ী উপজেলার ৮ নং সোনাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে, মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর হোসেন চৌধুরী। ৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিটে তিনি সোনাইমুড়ী উপজেলা কৃষি অফিসে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তিনি মনোয়নপত্র জমা দেন।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন, সোনাইমুড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাকের, সোনাইমুড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আ,ফ,ম বাবুল (বাবু), নোয়াখালী জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন দুলাল, সোনাইমুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিপি বাহার, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান খলিল, ৮নং সোনাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ইন্জিনিয়ার আব্দুর রহিম,৮নং সোনাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বাবুল মেয়া (বাবলু)
৮নং সোনাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মোঃ শাহজাহান, উপজেলা বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব পরিষদের সভাপতি মাহমুদ খান, ,৮নং সোনাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবুল বাশার পিন্টু,৮নং সোনাপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন।
৮ নং ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শওকত আকবর ও যুবলীগ,ছাত্রলিগ,স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।আরো‌ ছিলেন স্থানীয় সমাজের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন।

মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর দৈনিক নোয়াখালী সময় কে বলেন, আমি জনগণের সুখে দুখে তাদের পাশে ছিলাম, এখনও আছি, আগামীতে ও থাকব। করোনা মহামারীতে আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি ৮নং সোনাপুর ইউনিয়নের জনগণের পাশে থাকতে। তিনি বলেন,সরকারের দেওয়া সহযোগিতার পাশাপশি আমি ব্যক্তিগতভাবেও অসহায় কর্মহীনদের সহায়তা করেছি।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সোনাপুরকে মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত আধুনিক ইউনিয়ন পরিনত করার জন্য আমি কাজ করে চলেছি। ইনশাল্লাহ তা অব্যাহত থাকবে কিছু কাজ চলমান আছে অচিরেই সে কাজগুলো সমাপ্ত হবে।

আলমগীর হোসেন চৌধুরী এলাকাবাসী দোয়া ও সমর্থন কামনা করেন।

সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের নবগঠিত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম।

325 Views

সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের নবগঠিত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম।

মাহমুদ খাঁনঃ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত সহকারী আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম এর সাথে সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কার্যকরী কমিটির নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার এ সভায় আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। এ সময় তিনি বলেন, জাতির বিবেক খ্যাত সাংবাদিকরা সততার মাধ্যমে সত্য সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচার করবে এটাই স্বাভাবিক। অপরাধ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করলে বাধা আসতেই পারে, তা ভেবে কলম বন্ধ রাখলে চলবে না। উন্নয়ন সাংবাদিকতার উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন উন্নয়ন এবং অর্জন সমূহ গণমাধ্যমে তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের আহবান জানান।

মতবিনিময়ে অংশ নেন,সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি খোরশেদ আলম শিকদার, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মানিক, সহ-সভাপতি মাহমুদ খাঁন,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসাইন মাহমুদ, মাকসুদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ করিম,কোষাধ্যক্ষ সেলিম মিয়া (যুগান্তর),সমাজকল্যাণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, দপ্তর সম্পাদক মাহবুবুল হাসান, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদ,ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বেল্লাল হোসেন নাঈম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী টিভি সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি তাজুল ইসলাম মানিক, চ্যানেল আই নোয়াখালী প্রতিনিধি আলা উদ্দিন শিবলু, যমুনা টিভি নোয়াখালী প্রতিনিধি সবুজ, সাংবাদিক বদিউজ্জামান তুহিন, ইয়াকুব আল মাহমুদ প্রমুখ সাংবাদিক বৃন্দ।

ফেনীতে অপহৃত কলেজছাত্রী ২ মাস পর রাজধানীতে উদ্ধার, অপহরণকারী গ্রেপ্তার

215 Views

মোঃ রেজাউল করিম রাজু, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম: ফেনীতে কলেজ ছাত্রী অপহরণের দু’মাস পর ঢাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল রাজধানীর মিরপুর ১০নং এলাকার একটি বাসা থেকে সোমবার অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করে। এসময় পুলিশ অপহরণকরী হাছান পিয়াসকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে।গ্রেপ্তার হাছান পিয়াস ফেনী শহরের ৫নং ওয়ার্ড হাজী আফজলের রহমান সড়কের বিরিঞ্চি বড় বাড়ীর মো. আজাদের ছেলে বলে জানিয়েছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ এএনএম নুরুজ্জামান।পুলিশ জানায়, গত ১৫ই মার্চ সকালে শহরের ডাক্তার পাড়ায় এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায় ফেনী সরকারি কলেজের এক ছাত্রী। প্রাইভেট শেষে বাসায় ফেরার সময় শহরের ট্রাংক রোডের সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে থেকে ছাত্রীকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যায় পিয়াসসহ তার সহযোগীরা। সেই থেকে ওই কলেজ ছাত্রীর পরিবার নানাভাবে পিয়াস ও তার আত্মীয়স্বজনের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বিষয়টি স্বীকার করলেও মেয়ের সন্ধান দেয়নি। পরে মেয়েকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ওই কলেজ ছাত্রীর মা বাদী হয়ে গত ১৮ই মার্চ পিয়াসসহ ৬ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক এ এন এম নুরুজ্জামান আরো জানান, মামলার দু’মাস পর গত ১৩ই মে পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী মামলার তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।মামলার তদন্তভার পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপহরণকরী হাছান পিয়াসের অবস্থান নির্নয় করে অভিযান চালায়। সোমবার রাজধানী ঢাকার মিরপুর ১০নং এলাকা থেকে অপহরণকারী হাছান পিয়াসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে ঢাকা থেকে ফেনী গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। সেখানে জিঙ্গাসাবাদ শেষে রাতে তাকে ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার অপহৃতের শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে। পরে ২২ ধারায় কলেজ ছাত্রীর জবানবন্দি গ্রহণের জন্য তাকে আদালতে তোলা হবে। অপহরণকারী হাছান পিয়াসকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে।

 

নোয়াখালীতে থানায় যোগদানের আগেই ফেনীর দারোগা নিহত

192 Views

মোঃ কামরুজ্জামান, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম:  ৩৭তম ব্যাচের বন্ধুদের সাথে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে যোগদান করতে নোয়াখালীতে আসেন মিজানুর রহমান (৩১)। কিন্তু থানায় যোগদান করা হলো না মিজানের। মোটরসাইকেল ও হ্যান্ড টাক্ট্রর চাপায় প্রাণ গেল তার।মঙ্গলবার রাত ৮টা ৫০মিনিটের দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে মারা যান এসআই মিজানুর রহমান। এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে চৌমুহনী চৌরাস্তা-মাইজদী সড়কের চেঙ্গারপোল এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। ঘটনায় আহত হয়েছেন মিজানের ব্যাচমেট এসআই জাহিদুল ইসলাম।নিহত মিজানুর রহমান ফেনীর সদর উপজেলার সিরাজুল ইসলামের ছেলে। আহত জাহিদুল ইসলাম একই উপজেলার ফরহাদ নগর এলাকার নূরুল ইসলামের ছেলে।সুধারাম মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইউছুফ জানান, মঙ্গলবার নোয়াখালীতে আসেন এসআই মিজানুর রহমান ও জাহিদুল ইসলাম। সুধারাম মডেল থানায় মিজানুর রহমান ও বেগমগঞ্জ মডেল থানায় জাহিদুল ইসলামের যোগদানের কথা ছিল। সন্ধ্যায় মোটরসাইকেল যোগে জাহিদুলকে বেগমগঞ্জ থানায় পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন মিজান। পথে একলাশপুরের চেঙ্গারপোল এলাকায় পৌঁছলে একটি হ্যান্ড টাক্ট্রর পেছন দিকে এসে তাদের মোটরসাইকেলকে সামনে ধাক্কা দিলে দুইজন ছিটকে সড়কে পড়ে গিয়ে আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিজানুর রহমান। আহত জাহিদুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে।

ফেনী-বিলোনিয়া মুক্ত দিবসে পাক-হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ স্মৃতিতে অম্লান

269 Views

লে. কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম বীরবিক্রম, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম: ভৌগোলিক কারণে ফেনী-বিলোনিয়া যুদ্ধ ছিল মুক্তিবাহিনী ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর জন্য সামরিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উত্তপ্ত এই রণাঙ্গনে ছিল উভয়ের জন্য মর্যাদার লড়াই। ফেনীর বুক চিরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক রেলপথ ঢাকা পর্যন্ত প্রসারিত। একাত্তরের মার্চে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বাড়তি অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সৈন্য (তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান থেকে) ফেনীর ওপর দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল পাকিস্তানিদের। আমাদের ওপর দায়িত্ব ছিল পাকিস্তানিদের বাড়তি সৈন্য ও গোলাবারুদ যেন ফেনীর ওপর দিয়ে দেশের অন্য অঞ্চলে যেতে না পারে। বৃহত্তর নোয়াখালীর সাব-সেক্টর ও ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা অধিনায়ক হিসেবে আমার ওপর এই দায়িত্ব অর্পিত হয়। আমার সঙ্গে শুরুতে তৎকালীন ক্যাপ্টেন ইমাম উজ জামান, ক্যাপ্টেন হেলাল মোর্শেদ, ক্যাপ্টেন শহীদ, ক্যাপ্টেন মজিবুর রহমান, লে. দিদার, লে. মিজান, ক্যাপ্টেন মোকলেসুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান, হাসান ইমাম, মুক্তিযোদ্ধা ও মেডিকেল অফিসার টু ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজি.। এদের সঙ্গে মিলে সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধা ও ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বিভিন্ন পর্যায়ের সৈনিক এই যুদ্ধে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বের স্বাক্ষর রাখেন। ফেনী শহরের চারপাশে প্রতিরোধের পাশাপাশি আমাদের লক্ষ্য : পাকিস্তানি সেনারা যেন নোয়াখালী বেগমগঞ্জের চৌরাস্তা হয়ে লাকসাম কুমিল্লার দিকে না যেতে পারে। অথবা ঢাকা-কুমিল্লা থেকে লাকসাম হয়ে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা হয়ে শত্রুপক্ষ উল্টো ফেনীতে তাদের অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য কোনো সহযোগিতা করতে না পারে। এজন্য ফেনীর চারপাশ এবং বেগমগঞ্জ চৌরাস্তায় চতুর্মুখী প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। বেগমগঞ্জ চৌরাস্তাকে চার ভাগে ভাগ করা হয়।  নেতৃত্বে ছিলেন এক. সুবেদার লুৎফর রহমান ও গাজী আমিন উল্লাহ দুই. সুবেদার ওয়ালিউল্লাহ তিন. শ্রমিকনেতা রুহুল আমিন ও চার. সুবেদার সামছুল হক ও সুবেদার এসহাক। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আমার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় পরিষদ সদস্য নুরুল হক এবং খাজা আহমেদ। ফেনী জেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কালীরবাজার নামক স্থানে পাকিস্তানি বাহিনীর শক্ত ডিফেন্স ঘাঁটি থেকে ১ হাজার গজ দূরে মুন্সিরহাটে ওই ঘাঁটির মুখোমুখি আমরাও প্রায় তিন মাইলব্যাপী ডিফেন্স স্থাপন করি। এটি ছিল ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও গণযোদ্ধাদের প্রথম বিলোনিয়া সম্মুখযুদ্ধ। মুন্সিরহাটে আমাদের ঘাঁটির মাঝে ৭০০ গজ ঘন এন্টিট্যাংক এন্টিপার্সোনাল মাইনফিল্ড স্থাপন করি। হানাদারদের ছিল ট্যাংক, আর্টিলারি, জঙ্গি বিমান ও হেলিকপ্টার এবং ফেনীতে ছিল এক রেজিমেন্টের অধিক সৈন্য অনুকূল সমর্থনে। তাদের এই সক্ষমতার বিরুদ্ধে আমাদের ছিল অসীম মনোবল শত্রু নিধন করে দেশ মুক্ত করার দৃঢ় সংকল্প ও শপথ। ’৭১ সালের এপ্রিল থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত পাকিস্তানিরা নয়টি আক্রমণ চালায়। আমাদের সামনে স্থাপিত ঘন মাইনফিল্ড ও ভারতীয় আর্টিলারি সমর্থনে ব্যাপক মর্টার ও ভারী অস্ত্র ফায়ারিংয়ের মুখে আমাদের পাতানো ফাঁদ মাইনফিল্ড অতিক্রম করতে পারেনি। এই সম্মুখযুদ্ধে পাকিস্তানিদের প্রায় ৩০০ জন হতাহত হয়েছিল। জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী তার বই THE BETRAYAL OF EAST PAKISTAN (page-209)  এ স্বীকার করে বলেছেন, ‘A Brigade action which launched at Belonia was repulsed by10 East Bengal Regiment and muktibahini jointly. এটা ছিল প্রথম বিলোনিয়া সম্মুখযুদ্ধে গণযোদ্ধা ও নিউক্লিয়াস অব দশম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ঐতিহাসিক সামরিক অভিযান। পরে অবশ্য রণকৌশলগত কারণে এই ডিফেন্স মুহুরী নদীর পাড়ে প্রতিষ্ঠা করি এবং দ্বিতীয় বিলোনিয়া যুদ্ধের প্রস্তুতি নিই। উল্লেখ, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার নির্দেশে পাকিস্তান আর্মির সিজিএস জেনারেল হামিদ ফেনী সার্কিট হাউস থেকে এই যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন। সিজিএস জেনারেল হামিদের নেতৃত্ব দেওয়ার কারণ পাকিস্তানে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘তুমি বলছ পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) কোনো মুক্ত এলাকা নেই। আমরা সম্প্রতি ফেনী-বিলোনিয়া ঘুরে দেখেছি, ফেনী-বিলোনিয়া বিস্তীর্ণ এলাকা সম্পূর্ণ মুক্ত। সেখানে পাকিস্তানপ্রশিক্ষিত একঝাঁক অফিসার, সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের নেতৃত্বে এই মুক্ত অঞ্চল থেকে তোমাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে যাতে ফেনী-চট্টগ্রাম থেকে কোনো বাড়তি সৈনিক ও গোলাবারুদ ফেনীর ওপর দিয়ে অন্যান্য অঞ্চলে যেন না যেতে পারে। এ কথা শুনে ইয়াহিয়া জেনারেল হামিদকে পাঠান। সেই সফল উইথড্রয়ালে প্রাণরক্ষা করেছিল পাঁচ শতাধিক গণযোদ্ধা এবং একটি ব্যাটালিয়নের প্রায় ১৭০০ মুক্তিযোদ্ধার। মুহুরী নদীর ডিফেন্স অবস্থায় রাজনগর ও বগ কাচারিতে গণযোদ্ধা ও দশম  বেঙ্গল রেজিমেন্টের যোদ্ধারা প্রায় প্রতিদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অবস্থান ঘাঁটি ও অঞ্চলগুলোর ওপর রেইড, অ্যামবুশ, আর্টিলারির মাধ্যমে আমাদের ফায়ার অব্যাহত থাকে এবং তাদের ঘাঁটিগুলো অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এ ছাড়াও হাবিলদার জহির বীরবিক্রম ও হাবিলদার ইউনুছের সহযোগিতায় পাকিস্তানিদের মুভমেন্ট স্মিত করার জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ের ফেনীর শর্শদি রেলব্রিজ ও হাইওয়ের রাজনকরা ব্রিজটি কমান্ডো গ্রুপ ও সাকি প্লাটুন এক্সপ্লোসিভ দিয়ে বিধ্বস্ত করে চট্টগ্রাম-ঢাকার যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিখ্যাত বিলোনিয়া সম্মুখযুদ্ধ শুরুর আগ পর্যন্ত পাকিস্তানিদের আমরা হিট অ্যান্ড রান কৌশলের মাধ্যমে বিলোনিয়ায় পর্যুদস্ত ও অবরুদ্ধ করে ফেলি। শুরু হয় দ্বিতীয় বিলোনিয়া যুদ্ধের প্রস্তুতি। দ্বিতীয় বিলোনিয়া যুদ্ধ : ৫ নভেম্বর অন্ধকার শীতের রাত। টিপ টিপ বৃষ্টি হচ্ছিল। মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল পুরো রাতটা যেন কিছুর প্রতীক্ষায়। রাত ৯টায় অনুপ্রবেশের কাজ শুরু করি। এমন একটা এলাকা ঘেরাওয়ের অভিযানে নেমেছি যেখানে তিন পাশেই ভারত সীমান্ত। এক প্রান্তের সীমান্ত থেকে পরশুরাম-চিথলিয়ার মাঝ দিয়ে ভারত সীমান্তের অপর প্রান্ত পর্যন্ত অবরোধ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। অবরোধ শুরু হলো অন্ধকার রাতে। মুহুরী নদী ও সিলোনিয়া নদীর কোথাও বুক পানি কোথাও পিচ্ছিল রাস্তার বাধা পেরিয়ে এগিয়ে চলছিল সবাই। কমান্ডার হিসেবে সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত করে গন্তব্যে পৌঁছানো সত্যিই কষ্টকর ব্যাপার ছিল। প্রথমে মুহুরী নদী অতিক্রম করল লে. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে (বি কোম্পানি), ও লে. দিদারের নেতৃত্বে সি। দুই কোম্পানির পরে দশম ইস্ট বেঙ্গল হেড কোয়ার্টার কোম্পানি ও দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট থেকে আগত ক্যাপ্টেন হেলাল মোর্শেদের নেতৃত্বে আর একটি কোম্পানিসহ আমি নদী অতিক্রম করে সবাই পূর্বনির্ধারিত এলাকায় অবস্থান গ্রহণের উদ্দেশে যাত্রা অব্যাহত রাখি। এদিকে ক্যাপ্টেন ইমামুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মোকলেসুর রহমানের নেতৃত্বে এ ও ডি কোম্পানি চিথলিয়া ঘাঁটি বরাবর রেজিমেন্টের বি/ডি. এইচ কিউ ও দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল কোম্পানির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী অগ্রসর হতে থাকি।  ভোর হলো। আমরাও বাঙ্কারে প্রস্তুত। শত্রুরা সারা দিন আমাদের বিভিন্ন পজিশনের ওপর তুমুল আক্রমণ চালাল। বৃষ্টির মতো আসা শেলিংয়ের শব্দে আশপাশের এলাকা কেঁপে উঠতে লাগল। শত্রুরা এবার পরশুরাম ঘাঁটি থেকে আমাদের ওপর প্রচ- আক্রমণ শুরু করল। উভয় পক্ষের তুমুল গোলাগুলিতে বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে ভোর হলো। ভোর হওয়ার আগেই আমরা বাঙ্কার খনন করে শত্রুদের চারপাশে অবস্থান করে তাদের সম্পূর্ণ ঘেরাওয়ের মধ্য দিয়ে আসি। আমার নির্দেশ ছিল অর্ডার ছাড়া কেউ ফায়ার ওপেন করবে না। হঠাৎ চিথলিয়া ঘাঁটি থেকে  একটি ট্রলিতে সুবেদার লোদি ও আটজন সৈনিকসহ পরশুরাম ঘাঁটির দিকে আসছে। সুবেদার এয়ার আহম্মদ উত্তেজিত হয়ে অর্ডার ছাড়াই ফায়ার ওপেন করে। ওই ট্রলির সবাইকে এলএমজি ফায়ার করে বিধ্বস্ত করে এয়ার আহমেদ বীরবিক্রম ট্রলি থেকে লোদি ও বাকিদের অস্ত্র বাঙ্কারে নিয়ে আসার আগ মুহূর্তে শত্রুপক্ষের এলএমজি ফায়ারে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এয়ার আহম্মদ। হঠাৎ দেখলাম তিনটা বিমান আমাদের এলাকায় এসে বোম্বিং শুরু করল। চারদিকে দাউদাউ করে ঘরবাড়ি জ্বলছে। আমরা অপেক্ষায় কখন আমাদের এমএমজির আওতায় বিমানগুলো আসবে। দেরি হলো না। এমএমজি থেকে ছোড়া শুরু হয় তপ্ত বুলেট। দুটি বিমান উড়ে গেল তাদের সীমানায়। তৃতীয় বিমান যখন ফিরে যাচ্ছিল দেখলাম ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে। নিশ্চিত হলাম আমাদের এমএমজির ফায়ারিং আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। বিমানটি লাকসাম এলাকার অদূরে ভূপাতিত হয়েছে। রাতেই আমরা পরশুরাম ও বিলোনিয়া দখল করতে সক্ষম হলাম। সকালে দেখতে পেলাম ধানখেতের পানি রক্তবর্ণ। চারদিকে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে আছে শত্রু বাহিনীর সদস্যদের লাশ আর লাশ। অনেকে জখম। কারও হাত নেই। কারও পা নেই। যারা আহত হয়ে পালাতে চেয়েছিল তাদের পালানো হলো না। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া আমাদের কর্তব্য। তাড়াতাড়ি চিকিৎসার ব্যবস্থা করলাম। দুজন অফিসারসহ ৭২ জন সৈনিক দশম  বেঙ্গল তথা মুক্তিযোদ্ধার কাছে আত্মসমর্পণ করল। এটা ছিল স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে পাকিস্তানি হানাদারদের মুক্তিবাহিনীর কাছে প্রথম আত্মসমর্পণ। এই ধারাবাহিকতায় ফেনী-বিলোনিয়া মুক্ত করি। ৬ ডিসেম্বর বীরদর্পে আমরা ফেনীতে প্রবেশ করি। এই যুদ্ধে আমাদের ৩৭ জন যোদ্ধা শহীদ ও ২০০ জন আহত হন। ফেনী-বিলোনিয়া যুদ্ধ একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। বিলোনিয়ার বিখ্যাত এই যুদ্ধ রণকৌশল আজ বিশ্বের বিভিন্ন সামরিক কলেজে পড়ানো হয়।

ফেনী কারাগারে ধর্ষক জহির ও ধর্ষণের শিকার প্রেমিকার বিয়ে

218 Views

আজাদ মালদার, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম: ফেনীতে ধর্ষণ মামলার আসামির জামিন পেতে হাইকোর্টের নির্দেশে ফেনী কারাগারে ধর্ষক ও ধর্ষণের শিকার প্রেমিকার বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামানের উপস্থিতিতে ফেনী জেলা কারাগার চত্বরে ৬ লাখ টাকা দেনমোহরে ফেনীর সোনাগাজীর বাসিন্দা ধর্ষক জিয়াউল হক জিয়া ও ধর্ষণের শিকার তার প্রেমিকার বিয়ে পড়ান কাজী আবদুর রহিম। এ সময় বর-কনেসহ দু’পক্ষের লোকজন, বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। গত ১লা নভেম্বর, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এক আদেশ দেন। আদালত আদেশে উল্লেখ করেন, উভয়পক্ষ সম্মত থাকলে ফেনী জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ আদেশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করবে এবং বিয়ে সংক্রান্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টকে অবহিত করবে। বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছে কারা কর্তৃপক্ষের এমন প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা হলে আদালত আসামিকে জামিনের আদেশ দেবেন। রাষ্ট্র পক্ষেন আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পি বলেন, গত ৩০ জুন এ মামলার চার্জশিট দেয় পুলিশ। পরে আসামি উচ্চআদালতে জামিন নিতে এলে বিয়ের শর্ত দেন আদালত। কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিয়ে হয়ে উচ্চআদালতে প্রমাণপত্র এলে আসামিকে জামিন দেয়া হবে। আদালত মনে করেছে তরুণী এ বিয়ের মাধ্যমে প্রতারণা থেকে রক্ষা পেয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, এ দুই পরিবারের দিকে তাকিয়ে হয়তো সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আদালত। সামাজিকতার কথা চিন্তা করেছেন, তবে অপরাধ কমার ক্ষেত্রে এটি কোনো ভূমিকা রাখবে না। আমি মনে করি অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে। আদালত মনে করেছে, যদি আসামি বিয়ে করে, তা হলে এটি ন্যায়বিচার হবে। ভুক্তভোগী বিয়ের মাধ্যমে তার অভিযোগ তুলে নেবে। ফেনী জেলা কারাগারের জেল সুপার আনোয়ারুল করিম জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনা পেয়ে দুই পরিবারের মধ্যে আলোচনাক্রমে গতকাল তাদের বিয়ের তারিখ ধার্য করা হয়েছিল। সেই মোতাবেক কনেসহ দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিয়ে পড়ানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে পাঠানো হবে। জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা মতে জেল সুপারের তত্ত্বাবধানে আইনজীবী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দুই পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আলমগীর বলেন, ধর্ষণ মামলায় গত ২৯শে মে আসামি জিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। গ্রেপ্তারের পর থেকে সে ফেনী কারাগারে ছিল।  আদালতে জামিন না হলে আমি জিয়ার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে মিস মামলা দায়ের করেছিলাম। গত ১লা নভেম্বর আদালত বিয়ের শর্তে আমার মক্কেলকে জামিন দেবার অভিমত ব্যক্ত করে এ আদেশ দেন। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের মাধ্যমে আদালত ন্যায়বিচার করেছে। ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে ফেনীতে এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনাও বলছেন এই আইনজীবী। ছেলের বাবা আবু সুফিয়ান বলেন, আইনের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। হাইকের্টের নির্দেশনা মেনে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তথ্য পাঠানোর পর আশা করি দ্রুত আমার ছেলের মুক্তি মিলবে। জহির মুক্তি পেলে বাড়িতে বড় করে অনুষ্ঠান করে ছেলের বউকে ঘরে তুলে নেবো। সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজেদুল ইসলাম জানান, সোনাগাজীর উত্তর চরদরবেশ গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সুফিয়ানের ছেলে জহিরুল ইসলাম জিয়ার সঙ্গে প্রতিবেশী এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সূত্র ধরে বিয়ের প্রলোভনে গত ২৭শে মে কিশোরী প্রেমিকাকে ধর্ষণ করে প্রেমিক জহিরুল ইসলাম জিয়া। ঘটনার দিনই ভুক্তভোগী কিশোরী বাদী হয়ে প্রেমিক জিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। গত ২৯শে মে আসামি জিয়াকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে কটুক্তিকারী ফেনীতে মিঠুন দে ওরফে পিকলু নীল গ্রেফতার

235 Views

মনির হোসেন পাটোয়ারী ভুলু, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম: ফেনীর সেই পিকলু কুলাঙ্গার! ফেনীতে মিঠুন দে ওরফে পিকলু নীল (৩২) কে ফেসবুকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দীকাকে (রা.) নিয়ে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্র জানায়, পিকলু তার ব্যবহৃত ফেসবুক আইডি “পিকলু নীল” থেকে ধর্মীয় উস্কানিমূলক বিভিন্ন প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ফেনী শহরের ডাক্তার পাড়ার বাসিন্দা কালি প্রসাদ ওরফে বাচ্চু দে’র ছেলে পিকলু নীল তার ব্যবহৃত ফেসবুক আইডিতে ইসলাম, মহানবী (সা.), আলেম ওলামা ও পর্দার বিষয়ে বিভিন্ন বিদ্রুপ মূলক পোষ্ট করে আসছেন। এসব পোষ্ট ছড়িয়ে পড়লে ফেনীতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের নিকট দাবি জানায়। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাতে ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের ফজল উদ্দিন কারী বাড়ীর আশেক এলাহীর ছেলে ছানা উল্লাহ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। ফেনী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) ওমর হায়দার জানান, ধর্মীয় উস্কানির অভিযোগে পিকলুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।