ভর্তি বাণিজ্যে বিপুল অর্থ আয় অধ্যক্ষের

125 Views

 

ক্রাইম রিপর্টার, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম :  নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ সালমা আক্তার দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বাণিজ্য করেছেন কোটি কোটি টাকা। এজন্য কলেজের কিছু শিক্ষক নিয়ে তৈরি করেছেন সিন্ডিকেট। অবৈধ সুবিধা নিয়ে এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নির্ধারিত ছাত্রের বাইরে তিনি শিক্ষার্থী ভর্তি করেছেন। বিপুল পরিমাণ ছাত্রের জন্য ক্লাসরুম না থাকায় সিন্ডিকেট সদস্যরা এলাকায় কোচিং বাণিজ্যের সুবিধা নিচ্ছেন। কলেজেরই এক শিক্ষক এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দেন। গুরুতর এ অভিযোগ সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতা মিলেছে। এরপর এই অধ্যক্ষের আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সুপারিশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ৮ জুন প্রতিবেদনটি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জমা হয়।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, শুধু অবৈধভাবে ছাত্র ভর্তির বিষয় নয়, নকলকে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন অধ্যক্ষ সালমা আক্তার। একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, পড়ালেখা নেই প্রতিষ্ঠানটিতে। পাবলিক পরীক্ষায় নকলে বাধা দেওয়ায় ৭ শিক্ষক ছাত্রলীগ পরিচয়ধারী কয়েকজনের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়েছেন। স্থানীয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির কয়েক নেতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নকল উন্মুক্ত করে দেন। এমনকি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে কেন্দ্রে ঢুকেন কয়েক ছাত্রলীগ নেতা। তারা একাধিক শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে তাদের নকলে বাধা না দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের হুমকি দেন। বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানিয়েও কোনো ফল পাননি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা একাধিক শিক্ষক।

নথিপত্রে দেখা যায়, শিক্ষকদের পক্ষ থেকে নকলে সহযোগিতাসহ দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা তথ্য তুলে ধরে শিক্ষা সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা সচিব গুরুতর এসব অভিযোগ তদন্তেরও নির্দেশ দেন। কিন্তু তা গোপন করে উলটো অভিযোগের তির যে সিনিয়র শিক্ষকের বিরুদ্ধে, তাকে উপাধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিসিএস শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে নকল উন্মুক্ত করার অভিযোগ তদন্তও করা হয়। সেই তদন্ত প্রতিবেদনও আলোর মুখ দেখেনি। এ ছাড়াও নকলে বাধা দিয়ে ছাত্রলীগের কথিত একাধিক নেতার দ্বারা নাজেহালের বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছেও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এরপর নোয়াখালী পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলামের সঙ্গে ছাত্রলীগের কথিত নেতার তোলা একটি ছবি ভাইরাল হয়।

শিক্ষক আব্দুর রজ্জাককে নাজেহাল করার পর ছাত্রলীগের এই নেতার বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ সালমা আক্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে দাপ্তরিক চিঠি দিয়েছিলেন গত বছরের ১৭ নভেম্বর।

জানতে চাইলে এসপি শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আসলে এরকম অভিযোগ এলে সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দিই। ব্যক্তিগতভাবে আমি তাকে চিনি না। ছবি কখন তোলা হয়েছে, আমি মনে করতে পারছি না। তবে এরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগ সম্পর্কে কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান  বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে কলেজ থেকেও শিক্ষক রাজ্জাকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়। কলেজটিতে শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং আছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টকে দেখতে হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নকলের বিষয়টি আমাদের কানে আসার পর ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়া হয়েছিল।’

দুদকের তদন্তে যা আছে : জানা যায়, দুদকের কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাসুম আলীর নেতৃত্বে ৫ জুন এনফোর্সমেন্ট টিম নোয়াখালী সরকারি কলেজে অভিযান চালায়। অভিযোগ পর্যালোচনায় দেখা যায়, অধ্যক্ষ সালমা আক্তারের বিরুদ্ধে ১০টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ হচ্ছে কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান শাখায় বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত আসন সংখ্যা ৩শ। অথচ অধ্যক্ষ সিন্ডিকেট করে ২৩৭ জন অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করেন। অর্থাৎ ৩০০-এর স্থলে ৫৩৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করেন। ভর্তির জন্য তারা জনপ্রতি ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা করে ঘুস গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ক্লাসে পর্যাপ্ত জায়গা না হওয়ায় অধ্যক্ষের সিন্ডিকেটের কিছু শিক্ষক ক্লাস না নিয়ে মাস্টারপাড়ায় কোচিং বাণিজ্য শুরু করেছেন। অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির এই অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র যাচাই-বাছাই করার লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড পরিদর্শন ও অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় কলেজের পরিদর্শক মো. জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলেন এবং রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করেন।

রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, নোয়াখালী সরকারি কলেজের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে দ্বাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান শাখায় ৩০০ আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই আসন সংখ্যার বিপরীতে বোর্ড ৩০৯ জনের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে। আবার একই শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে শুধু শূন্য আসনের বিপরীতে অনলাইনে আবেদন করে বোর্ডের অনুমোদনক্রমে ট্রান্সফারের মাধ্যমে শিক্ষার্থী এক কলেজ থেকে আরেক কলেজে ভর্তি হতে পারেন, যা স্বাভাবিক নিয়মে হয়। তবে দ্বাদশ শ্রেণিতে ট্রান্সফারের ব্যবস্থায় অনলাইন সিস্টেম নেই। অফ লাইনে এই ভর্তি কার্যক্রম হয়। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অধ্যক্ষ সালমা আক্তার, তার সিন্ডকেট এবং বোর্ডে কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় বড় অঙ্কের লেনদেনের মাধ্যমে ৩০০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৫৩৭ জনকে ভর্তি করেছেন।

দুদকের ভর্তি প্রক্রিয়া বিশ্লেষণে দেখা যায়, যদি কোনো শিক্ষার্থী দ্বাদশ শ্রেণিতে ট্রান্সফারের মাধ্যমে ভর্তি হতে চায়, তবে যে কলেজে অধ্যয়নরত, সে কলেজের অধ্যক্ষের কাছ থেকে এ মর্মে প্রত্যয়ন নিতে হয়। ভর্তি-ইচ্ছুক কলেজে আসন ফাঁকা এবং বোর্ড কর্তৃক অনুমোদন সাপেক্ষে ছাড়পত্র ইস্যু হয়ে থাকে। এরপর শিক্ষার্থী যে কলেজে ভর্তি হতে ইচ্ছুক, ওই কলেজের অধ্যক্ষও প্রত্যয়ন করবেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, নোয়াখালী সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান শাখায় ভর্তির ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো নিয়ম অধ্যক্ষ সালমা আক্তার বা কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ অনুসরণ করেননি। তিনি শূন্য আসন না থাকার পরও অতিরিক্ত ২৩৭ জন শিক্ষার্থীকে ফরোয়ার্ডিং দিয়েছেন এবং পরবর্তী সময়ে ভর্তি করেছেন। বিনিময়ে নিয়েছেন জনপ্রতি ৪০ হাজার টাকা করে ঘুস। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ড কুমিল্লার সংশ্লিষ্ট নথি পর্যালোচনা করে দুদক দেখতে পায়, দুটি স্মারকপত্রে এই ভর্তির দুর্নীতি করা হয়েছে। এ দুটি নথিতে নোয়াখালী সরকারি কলেজের ২৩৭ জন এবং ফেনী সরকারি কলেজে একইভাবে অনিয়ম-দুর্নীতি করে ভর্তি করা ৪৩৫ জন শিক্ষার্থী আছে। অন্য একটি নথিতে বোর্ড কর্তৃক বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যার অতিরিক্ত প্রায় ১৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির তথ্য পাওয়া যায়। যেখানে বোর্ডের অনুমোদন ও অধ্যক্ষের সুপারিশ রয়েছে। এ বিষয়ে উপস্থিত জিজ্ঞাসাবাদ দুদক গোপন তদন্ত করে জানতে পারে, ‘এই ভর্তি বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার ঘুস লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের সঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ সালমা আক্তার ও তার অনুগত কয়েকজন শিক্ষক এবং কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত আছেন। এক্ষেত্রে শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ও উপকলেজ পরিদর্শক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একজন ক্ষমতাধর পরিচালক জড়িত বলে জানা যায়।

ভর্তি বাণিজ্যের বিষয়ে দুদক প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, সরেজমিন পরিদর্শনে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে অধ্যক্ষ সালমা আক্তার সরাসরি জড়িত। এছাড়া কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক, উপপরিদর্শক এবং সংশ্লিষ্ট অন্যদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অনুসন্ধান করা যেতে পারে। একই সঙ্গে ভর্তি বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা আয় করে অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে সুষ্ঠু অনুসন্ধানের জন্য অধ্যক্ষ সালমা আক্তারের বিরুদ্ধে সম্পদের প্রকাশ্য অনুসন্ধান করা যেতে পারে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ সালমা আক্তার রোববার রাতে  বলেন, রাজনৈতিক চাপে নির্ধারিত ছাত্রের বাইরেও কিছু ভর্তি আমাদের নিতে হয়েছে, এটা ঠিক। শুধু যে আমার আমলে এই অতিরিক্ত ভর্তি, তা কিন্তু নয়। এর আগের রেকর্ডপত্র দেখেও মনে হয়েছে, এই কলেজে অতিরিক্ত ভর্তি হয়েছে। তবে নির্ধারিত ফির বাইরে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি। আর অতিরিক্ত ভর্তির বিষয়ে বোর্ডের ভূমিকাই বেশি। ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার অভিযোগটি মোটেও সঠিক নয়।

নকল উন্মুক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে এই অধ্যক্ষ বলেন, পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের এ নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়েছে। তবে ৭ শিক্ষক লাঞ্ছিত বলতে তর্কাতর্কি হয়েছে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এলাকার কিছু ছেলে এমন ঘটনার সঙ্গে আগে যুক্ত থাকলেও এখন নেই। বিষয়টি আমি জেলা প্রশাসক ও লোকাল থানায়ও লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. জামাল নাছের যুগান্তরকে বলেন, দুদকের প্রতিবেদনে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ও উপকলেজ পরিদর্শকের যোগসাজশের যে অভিযোগ উত্থাপন করেছে, এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি। কারণ, এ দুজন কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে এক গ্লাস পানিও খান না। তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়ায় কলেজের একটি অংশ জড়িত থাকতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১০-২০ শিক্ষার্থী অতিরিক্ত ভর্তির বিষয়টি মেনে নেওয়া যায়। কারণ, স্থানীয়ভাবে অনেক তদবির থাকে। কিন্তু ২৩৭ জন অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি অগ্রহণযোগ্য। নকল উন্মুক্ত রাখার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত কিছু ছেলে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। বিষয়টি দেখা হবে।

অভিযোগকারীকেই হয়রানি : কলেজের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ করে ফেঁসে গেছেন শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক। তিনি শিক্ষা ক্যাডারের ৩৪ ব্যাচের কর্মকর্তা। দুদকের অনুসন্ধানের খবর পেয়ে অধ্যক্ষ সালমা আক্তার অভিযোগকারীকে দাপ্তরিক হয়রানি করছেন। তিনি ৫ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগে তাকে মানসিকভাবে অসুস্থও বলেছেন। এ চিঠি পেয়ে সচিব মেধাবী ও সৎ শিক্ষক হিসাবে পরিচিত আব্দুর রাজ্জাককে খাগড়াছড়ি রামগড় সরকারি কলেজে বদলি করেন। তার বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের অভিযোগ আমলে নিয়ে বিভাগীয় মামলা চালু করা হবে

সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নোয়াখালীতে মানববন্ধন

126 Views
মাহমুদ খান,  দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম : পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নোয়াখালীতে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা।
৩১ অক্টোবর, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাবের উদ্যোগে প্রেসক্লাবের সামনে সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি বখতিয়ার শিকদার, সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের মঞ্জু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন বিষাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন সোহাগ, চ্যানেল ২৪ এর স্টাফ রিপোর্টার সুমন ভৌমিক।
বক্তারা গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ সময় সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে দায়িত্বশীল আচরণ করারও আহ্বান জানানো হয়।

নোয়াখালীর সেনবাগে ভুল চিকিৎসায় মা ও শিশুর মৃত্যু; একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বাবা!

1,246 Views

মেডিকেল রিপোর্টার, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম :  নোয়াখালীতে সাউথ বাংলা হসপিটালের অব্যবস্থাপনা, চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় মা ও সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা: মাসুম ইফতেখার। কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা: খালেদা আক্তার খানম কে সভাপতি এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা: রওশন জাহান লাকী, সিভিল সার্জন অফিসে কর্মরত রেখা রানী মজুমদারকে সদস্য ও বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা: আবদুল কাদের চৌধুরীকে সদস্য সচিব করে এ কমিটি করা হয়।

তদন্ত কমিটি আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে সুষ্ঠ তদন্ত করে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন জেলা সিভিল সার্জন ডা: মাসুম ইফতেখার।

গত ২৩ অক্টোবর নিহত উম্মে সালমা নিশির পিতা বিশিষ্ট সাংবাদিক, কাদরা হামেদিয়া দাখিল মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এম.এ.আউয়াল তার একমাত্র মেয়ে ও নাতিকে সেনবাগ এবং নোয়াখালীর সাউথ বাংলা হসপিটালের অব্যবস্থাপনার সিজারের সময় ডা: ফৌজিয়া ফরিদ, ডা: আক্তার হোসেন অভি ও মেডিকেল অফিসার ডা: জাহিদের ভুল চিকিৎসা, অবহেলা ও হটপিটালের বিরুদ্ধে মা ও সন্তানেের মৃত্যুর বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।

উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সেনবাগ পৌরসভার কাদরা এলাকার সমাজ সেবক ও সাংবাদিক এম এ আউয়ালের এক মাত্র কন্যা নয় মাসের অন্ত:সত্তা উম্মে সালমা নিশি (২৭) কে তার মাতা নুর মহল মুন্নী সেনবাগ সরকারী হাসপাতালে অক্সিজেনসেবা দিতে নিয়ে আসেন। ওই সময় হাসপাতালের ২য় তলায় কর্তব্যরত নার্স শিউলী আক্তার অক্সিজেন সেবা দিতে ব্যর্থ হন। এর পর তারা সেনবাগের বেসরকারী সেন্ট্রাল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে নিশিকে আল্ট্রা করেন ডা: সাওদা তাসনিম। রিপোর্টে তার গর্ভের সন্তানের হার্টবিট ২৪১ পেয়ে দ্রুত নোয়াখালীতে রেফার করেন তিনি।

সম্পূর্ণ সুস্থ্য ও সবল নিশিকে তার পরিবার রাত সোয়া ১১ টায় নোয়াখালীর সাউথ বাংলা হসপিটালে নিয়ে যায়। এ সময় কর্তব্যরত ডা: জাহিদকে বেবীর হার্টবিটের আল্ট্রা রিপোর্ট দেখালে তিনি পালস মেপে ১৬০ – ৯০ ও ডায়াবেটিস পান ৬.১। পুনরায় আল্ট্রা সহ অন্যান্য পরীক্ষার কথা বলে ডা: জাহিদের নেতৃত্বে ডা: ফৌজিয়া ফরিদ, ডা: আক্তার হোসেন অভি সহ সংশ্লিষ্ট ইউনিট নিশিকে ওটিতে নিয়ে যান। কোনো রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা না করে এবং নিশির পিতা মাতার অনুমতি না নিয়েই তারা সিজার করে তিন কেজি সাত শত গ্রামের পুত্র সন্তানকে একটি কার্টুনে বের করে আনেন এবং বলেন শিশুটি দু’দিন আগে মারা যায়।

প্রশ্ন থেকে যায় এক ঘন্টা আগে করা রিপোর্টে সন্তানের হার্টবিট ২৪১ পাওয়া যায়। তাহলে সাউথ বাংলা হসপিটাল আরেকটা আল্ট্রা করলে বুঝা যেত সন্তান বেঁচে আছে নাকি মৃত্যু হয়েছে। শিশু জীবিত না থাকলে মায়ের সিজার লাগতোনা। জড়িতদের ভূলের কারনেই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে মর্মে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান। রাত সোয়া একটায় চিকিৎসকরা প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন জানিয়ে আইসিইউ সাপোর্টের জন্য কুমিল্লাতে পাঠান। কাপড়ে ঢেকে নিথর নিশির প্রান বাঁচাতে এ্যাম্বুলেন্স যোগে কুমিল্লা টাওয়ারস্থ মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ইসিজি করে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তারা বলেন মৃত লাশ নিয়ে এসেছেন, দেড় ঘন্টা আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। সন্তান যদি গর্ভে মারা যায় তাহলে প্রসূতি মায়ের সিজারের প্রয়োজন ছিলো না। চিকিৎসক ও হাসপাতালের ভূল চিকিৎসায় পিতা মাতার আদরের একমাত্র মেয়ের মৃত্যুতে সারা জেলায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। ভোর সোয়া ৪টায় কুমিল্লা থেকে লাশবাহী গাড়ী নিয়ে বাড়ীতে ফেরলে এ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের শব্দে ঘুম ভাঙ্গে শহরবাসির। তাদের একমাত্র মেয়ে ও নাতির মৃত্যুর সংবাদ শুনে কাক ডাকা ভোরে হাজার হাজার নারী পুরুষ ভীড় করেন তাদের বাড়ীতে।

৩কেজি ৮শত গ্রাম ওজনের নবজাতকের নাম রাখা হয় নিজাম উদ্দিন নিহাল। সকাল ৯ টায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করেন এলাকাবাসী। বেলা সাড়ে ১১ টায় কাদরা হামেদিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে উম্মে সালমা নিশির যানাজা শেষে শিশু নিহালের পাশেই তাকে দাফন করা হয়।
যানাজায় ইউএনও জিসান বিন মাজেদ, সেনবাগ পৌরসভার মেয়র আবু নাছের দুলাল, এসিল্যান্ড মো: জাহিদুল ইসলাম, ওসি নাজিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনীতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী, স্বজন সহ কয়েক হাজার মানুষ জানাযায় অংশ গ্রহন করেন।

এদিকে, মৃত্যুর বিষয়ে নিহতের মাতা নুর মহল মুন্নী জানান, তার মেয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলো। ওইদিন সন্ধ্যায় তার গর্ভের সন্তানের হার্টবিট না থাকায় সে নিজেই হেঁটে সেনবাগ সরকারী হাসপাতালে অক্সিজেন সেবা নিতে যান। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার গাইনী বিভাগের ডা: শাহানা আক্তার লিপির চিকিৎসাধীন ছিলেন নিশি। ১৩ অক্টোবর বিকেলে ও তাকে দেখে হরমন সহ ৩ টি টেষ্ট দেন। ২৪ অক্টোবর নিশির ডেলিভারির তারিখ ও নির্ধারন করেন ডা: লিপি। ১৪ অক্টোবর ডা: লিপিকে রিপোর্ট গুলো দেয়ার পর আর কোন পদক্ষেপ নেননি তিনি। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ডা: লিপিকে রোগীর বিষয়ে ২০ বারের অধিক ফোন দিলে ও তিনি রিসিভ করেননি। এর আগে সেনবাগ সরকারী হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মুহিবুস সালাম খাঁন সবুজের সহায়তা চেয়েও ব্যর্থ হন তারা।

সাউথ বাংলা হসপিটাল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের অবহেলা এবং ভুল চিকিৎসায় এ হাসপাতালেই তাদের মৃত্যু ঘটে বলে জানায় নিশির পিতা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও অভিযুক্ত চিকিৎসকরা মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আইসিইউর নামে প্রতারনা করেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

চট্রগ্রাম সরকারী কলেজের মেধাবী ছাত্রী নিশি ২০২২ সালে ফাস্ট ক্লাস পেয়ে এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করেন। একই সনে কবিরহাট উপজেলার মিয়া বাড়ীর প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করা ব্যবসায়ী কুতুব উদ্দিন বখতিয়ারের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়।

নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা: মাসুম ইফতেখার দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কমকে জানান, সুষ্ঠ তদন্তের জন্য ৪ সদস্যের কমিটি হয়েছে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

সাংবাদিক এম এ আউয়ালের মেয়ে ও নাতির এমন করুন
মৃত্যুতে পরিবার সহ এলাকায় শোকের মাতম চলছে।

নোয়াখালীতে যুব পুরস্কার প্রাপ্ত জাকিরকে সংবর্ধনা

116 Views

নোয়াখালীতে জাতীয়ভাবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রথম যুব পুরস্কারপ্রাপ্ত জাকির হোসেনকে সংবর্ধনা ও ক্রেস্ট দিয়েছে নোয়াখালী জেলা প্রশাসন।  এ উপলক্ষ্যে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুর রহমান তার হাতে পুরস্কার ও ক্রেস্ট তুলে দেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজিমুল হায়দার (সার্বিক), নোয়াখালী প্লেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের মঞ্জু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন সোহাগ ও কোষাধ্যক্ষ আলাউদ্দিন শিবলুসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, নোয়াখালী সদরে মৎস্য খামার, কৃষি খামার ও পোল্ট্রি খামারে অবদান রাখায় ও বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান এর সুযোগ সৃষ্টির কারণে ২০২২ সালে জাতীয়ভাবে তাকে ১ম পুরস্কার দেওয়া হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করেন।­

নোয়াখালীতে ইউপি চেয়ারম্যান-আ.লীগ সভাপতিসহ ৬জনের কারাদন্ড

11 Views

রাসেদ বিল্লাহ চিশতি, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম :  নোয়াখালীতে সিআর মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতিসহ ছয়জনকে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে নোয়াখালীর বিশেষ দায়রা জজ (জেলা ও দায়রা জজ) এ এন এম মোর্শেদ এই দণ্ডাদেশ দেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন দুলু, একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আশ্রাফুল আলম চৌধুরী কামাল, প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ভূঁইয়া, মাহবুবুল আলম জাবেদ (সাবেক মেম্বার), এইচ এম শাহজাহান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম মিলন।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর কোর্ট ইন্সপেক্টর মো.শাহ আলম।  তিনি বলেন, বুধবার বিকেলে একটি সিআর মামলায় দন্ডবিধি ৩৬৫ ধারায় আসামিদের উপস্থিতিতে বিচারক এ আদেশ দেন। ২ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি অন্য একটি ধারায় আসামিদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। পরে আসামিদের জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

হাতিয়ায় ১৮ মামলার আসামি ইয়াবাসহ গ্রেফতার

32 Views

হাতিয়া প্রতিনিধি, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম :
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াতে ১৮ মামলার এক আসামিকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় পুলিশ ২২ পিস ইয়াবা জব্দ করে।

গ্রেফতার মো.জহির (৩০) উপজেলার হাতিয়া পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচবিঘা গ্রামের মুক্তার মিস্ত্রীর ছেলে।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার হাতিয়া পৌরসভার ৬নম্বর ওয়ার্ডের চরকৈলাশ তাহেরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো.শহীদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ উপজেলার চরকৈলাশ তাহেরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অভিযান চালায়। ওই সময় ২২ পিস ই্য়াবাসহ ১৮ মামলার আসামি জহিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।  বৃহস্পতিবার দুপুরের আসামিকে বিচারিক আদালতে সোপর্দ করা হবে।

অপহরণের ৪দিন পর কিশোরী উদ্ধার, গ্রেফতার-৩

212 Views

রেজাউল করিম, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম : নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় এক কিশোরীকে (১৭) অপহরণের অভিযোগ তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন, উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব লামছি গ্রামের আবদুল হালিমের ছেলে মো.সুজন মিয়া (২৯) উত্তর পূর্ব লামছি আবুল হাসেমরে ছেলে মো.ফারুক (২২) ও একই ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো.ইব্রাহীম (৩০)।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরের দিকে আসামিদের নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়।  এর আগে, একই দিন সকালের দিকে উপজেলার পূর্ব লামছি গ্রামের মজিদের হাট থেকে অপহরণকারীদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় পুলিশ অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়,গত রোববার ২২ অক্টোবর দুপুর ৩টার দিকে উপজেলার লেদু কোম্পানীর হাট এলাকা থেকে অজ্ঞাত আসামিরা সিএনজি যোগে কিশারীকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের পিতা এ ঘটনায় নারীও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।

কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কমকে বলেন, মামলা দায়েরের ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় ভিকটিমের ২২ ধারার জবানবন্দী সহ অন্যান্য কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

নোয়াখালীতে পাওয়ার টিলার-সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে নারীর মৃত্যু

83 Views
চরজব্বর প্রতিনিধি, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম : নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় বেপরোয়া গতির সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও পাওয়ার টিলারের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক বৃদ্ধ নারীর মৃত্যু হয়েছে।এ দুর্ঘটনায় আরও ৪ সিএনজি যাত্রী গুরুত্বর আহত হয়েছেন।  আহতরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতরা হাতিয়ার চানন্দী ও হরণী ইউনিয়নের বাসিন্দা।
নিহত নুর নাহার বেগম (৬৫) হাতিয়া উপজেলার হরণী ইউনিয়নের মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টার উপজেলার ২নং চরবাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ঘাট টু সোনাপুর সড়কের তালতলি সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চরবাটা দক্ষিণ পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। শুক্রবার দুপুরের দিকে ওই সড়কে নির্মাণাধীন ভবনের মালামাল নিয়ে আসে একটি পাওয়ার টিলার। একই সময়ে চেয়ারম্যান ঘাট থেকে সোনাপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে একটি যাত্রীবাহী সিএনজি। সিএনজি তালতলি এলাকায় পৌঁছলে সামনে থাকা পাওয়ার টিলারটি হঠাৎ সড়কের উল্টো দিকে ঘুরাতে গেলে অটোরিকশার সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নুর নাহারকে মৃত ঘোষণা করে।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবির বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। নিহত নারীর মরদেহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নোয়াখালীতে স্বাচিপের নতুন কমিটি নিয়ে ২ গ্রুপ মুখোমুখি

68 Views
শাহাদাৎ বাবু, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম :  নোয়াখালীতে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে নতুন ও পুরাতন কমিটি মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। মানববন্ধন এবং সংবাদ সম্মেলন করে একে অপরকে করছেন বিষোদগার।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন নতুন আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ। এতে আহ্বায়ক ডা. এফ. এম শাহাদাৎ হোসেন ও সদস্য সচিব ডা. আবদুস সাত্তার ফরায়েজী বাবুলসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, পূ্র্বের বাতিল করা কমিটির নেতারা জেলায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, বদলী বাণিজ্যসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন। আমরা ওই কমিটির সভাপতি ডা. ফজলে এলাহী খান ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহবুবুর রহমানসহ অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সাংবাদিকদের অনুসন্ধান করার অনুরোধ জানাই।
এরআগে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সামনে সাবেক কমিটির সভাপতি ডা. ফজলে এলাহী খান ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তারা বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ডা. আবদুস সাত্তার ফরায়েজী বাবুলকে নোয়াখালী স্বাস্থ্য খাতের ডন ও চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘তার কুলাঙ্গার সহচরদের দৌরাত্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে জেলার চিকিৎসক সমাজ। জেলা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে আজীবন নিষিদ্ধ এসব ডাক্তার চিকিৎসকদের নিয়ে চিনিমিনি খেলছেন।’
গত ১৮ অক্টোবর ডা. এফ এম শাহাদাৎ হোসেন রোমেলকে আহ্বায়ক ও ডা. আবদুস ছাত্তার ফরায়েজী বাবুলকে সদস্য সচিব করে নোয়াখালী স্বাচিপের ১৫ সদস্যের নতুন কমিটি অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী ও মহাসচিব ডা. মো. কামরুল হাসান মিলন।
কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী খবরের কাগজকে বলেন, আগের কমিটি বিলুপ্ত করে ডা. শাহাদাৎ হোসেন ও ডা. আবদুস ছাত্তার ফরায়েজীকে দিয়ে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি অতিদ্রুত সময়ে সম্মেলন করে একটি নতুন কমিটি গঠন করবেন।
এরআগে নোয়াখালী স্বাচিপের সাবেক কমিটির সভাপতি ডা. ফজলে এলাহী খানসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে হাসপাতালের মালামাল ক্রয়ের নামে কোটি কোটি সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। এনিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় অনুসন্ধান করে মামলার সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

নোয়াখালী  সুবর্ণচরে নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে পুকুরের পানিতে পড়ে মৃত্যু

68 Views
মো: ছানা উল্লাহ, দৈনিক নোয়াখালী সময় ডট কম :  নোয়াখালী  সুবর্ণচরে নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে পুকুরের পানিতে পড়ে নাঈমা সুলতানা (৩) নামের এক শিশু মারা গেছে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে বারটার দিকে উপজেলার চরক্লার্র্ক ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু নাঈমা উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভান্ডারী মার্কেট সংলগ্ন শেকান্তর হোসেনের বাড়ির শেকান্তর হোসেনের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বড় বোন নুসরাত সুলতানার স্কুল পূজার বন্ধ থাকায় ছোট বোন নাঈমা সুলতানা নিয়ে একই ইউনিয়নের ৭ নংম্বর ওয়ার্ডে নানার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বাড়ির উঠানে খেলাধূলার এক পর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে নাঈমা বাড়ির পুকুরে পড়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে দীর্ঘক্ষণ না দেখে আশেপাশে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে পুকুর থেকে তাকে ভাসতে দেখেন। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।